About Us
ABOUT FOUNDER

আশালতা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা দানবীর মৃদুল কান্তি দে’র সংক্ষিপ্ত জীবনী
চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার পশ্চিম গুজরা গ্রামে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ০৮ জানুয়ারি সুরেন্দ্র লাল দে ও আশালতা দে’র জ্যেষ্ঠ সন্তান মৃদুল কান্তি দে জন্মগ্রহণ করেন। অল্প বয়সে পিতৃহীন হওয়ায় মা ও দুই ভাইবোনের সংসারের সম্পূর্ণ দায়িত্ব এসে পড়ে তাঁর উপর। অভাব-অনটনের মধ্য দিয়েও ১৯৬২ সালে আবুরখিল অমিতাভ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করে সিটি কলেজের নৈশ বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হওয়ার পাশাপাশি চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে এক মারোয়ারি আমদানীকারক প্রতিষ্ঠানে চাকুরিতে যোগ দেন। চাকুরি ও পড়ালেখা একই সমান্তরালে চালিয়ে যেতে ব্যর্থ হওয়ায় তাঁর শিক্ষাজীবনের ইতি ঘটে তখনই। চাকুরি ক্ষেত্রে বিশ্বস্ততা তাঁকে আর্থিক সমৃদ্ধি প্রদান করে। ১৯৬৮ সালে তিনি শ্রীমতি চিত্রা রানী দে’র সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি বিশিষ্ট শিল্পপতি মির্জা আবু, আকবর আলী সওদাগর ও জননেতা আবদুল্লাহ আল হারুন এর তত্ত¡াবধানে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় শরণার্থী শিবিরে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। স্বাধীনতার পরে রাউজান থানায় ত্রাণ ও পুনর্বাসন কাজ শুরু করার পাশাপাশি গুজরা ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী চেয়ারম্যান-এর দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীন বাংলাদেশে নতুন করে বিভিন্ন ব্যবসায়ের পাশাপাশি শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একজন সফল ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ব্যবসায়ে অর্জিত অর্থের বিপুল অংশ তিনি মানবকল্যাণ, স্বধর্ম পরিপোষণ ও বিভিন্ন মঠ মন্দির প্রতিষ্ঠা ও সংস্কারের কাজে ব্যয় করতে থাকেন। দানশীলতা ও সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে চট্টগ্রামের অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের সভাপতি/সম্পাদকের দায়িত্ব তাঁর উপর ন্যাস্ত হয়। তন্মধ্যে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় পূজা উদ্যাপন পরিষদ, চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদ্যাপন পরিষদ, অভয়মিত্র মহাশ্মশান পরিচালনা পরিষদ, গোলপাহাড় মহাশ্মশান পরিচালনা পরিষদ অন্যতম। ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উদ্যাপন পরিষদ গঠন করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। বাংলাদেশে ইস্কন, আদ্যাপীঠ রামকৃষ্ণ সংঘের মত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ডও প্রতিষ্ঠা হয় তাঁর হাত ধরে। মানবদরদী এ মানুষটির অপরিসীম সমাজকর্মের মধ্যে সর্বোত্তম কর্মটি হলো ১৯৯৫ সালে নিজ গ্রামে মায়ের নামে আশালতা কলেজ প্রতিষ্ঠা। নিজ গ্রামের গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার পথ সুগম করার মানসে চার একর জমির উপর দৃষ্টিনন্দন এ প্রতিষ্ঠান গড়ে এ প্রতিষ্ঠানকে চট্টগ্রামের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠে পরিণত করার জন্য তিনি আমৃত্যু সচেষ্ট ছিলেন। ব্যক্তি জীবনে দুই পুত্র ও তিন কন্যার জনক মৃদুল কান্তি দে নিজের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দানবীর, কর্মবীর, পল্লীসারথীসহ নানা অভিধায় অভিষিক্ত। অকুতোভয়, সৎসাহসী, নিরহঙ্কার, বন্ধুবৎসল, মানবপ্রেমী ও ত্যাগী এ মানুষটি নিজের প্রতিষ্ঠিত অসংখ্য প্রতিষ্ঠানকে অভিভাবকহীন করে ২০১৪ খ্রিস্টাব্দের ১৪ জুলাই সোমবার মৃত্যুবরণ করেন।
